• আমাদের দাওয়াত : সকল বিধান বাতিল কর, অহি-র বিধান কায়েম কর। আসুন! পবিত্র কুর‘আন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে জীবন গড়ি।

02 June, 2015

সুন্নাত উপেক্ষার পরিণাম


লিলবার আল-বারাদী
মানবতার হেদায়াতের জন্য মহান আল্লাহ যুগে যুগে নবী-রাসূলগণকে প্রেরণ করেছেনতাঁদের মধ্যে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ হলেন মুহাম্মাদ (ছাঃ)তাঁর উম্মত তথা মুসলিম জাতিকে হেদায়াতের জন্য মহাগ্রন্থ আল-কুরআন দান করেছেনহাদীছ বা সুন্নাত হচ্ছে কুরআনের নির্ভুল ব্যাখ্যা কুরআন সঠিকভাবে বুঝে সে অনুযায়ী আমল করতে হলে হাদীছ বা সুন্নাহর কোন বিকল্প নেইসুতরাং মুমিন জীবনে সুন্নাহর গুরুত্ব অপরিসীমপক্ষান্তরে সুন্নাতকে উপেক্ষা করা, তাকে অবজ্ঞা-অবহেলা ভরে প্রত্যাখ্যান করা রাসূল (ছাঃ)-কে প্রত্যাখ্যান করার নামান্তরএহেন গর্হিত কাজের পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহআলোচ্য নিবন্ধে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হ

সুন্নাহর পরিচিতি :
সুন্নাহ (السنة) শব্দটি سن- يسن থেকে ক্রিয়ামূলযার অর্থ তরীকা বা পন্থা, পদ্ধতি, রীতিনীতি, হুকুম ইত্যাদিএই পদ্ধতি ও রীতিনীতি নন্দিত বা নিন্দিত কিংবা  প্রশংসিত বা ধিকৃত উভয়েই হতে পারেযেমন- السنة من الله (আল্লাহর নীতি)মহান আল্লাহ্ বলেন, سُنَّةَ مَنْ قَدْ أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ مِن رُّسُلِنَا وَلاَ تَجِدُ لِسُنَّتِنَا تَحْوِيلاًআপনার পূর্বে আমি যত রাসূল প্রেরণ করেছি, তাদের ক্ষেত্রেও এরূপ নিয়ম ছিলআপনি আমার নিয়মের কোন ব্যতিক্রম পাবেন না’ (ইসরা ১৭/৭৭)রাসূল (ছাঃ) বলেন, وَمَنْ سَنَّ فِى الإِسْلاَمِ سُنَّةً سَيِّئَةً كَانَ عَلَيْهِ وِزْرُهَا وَوِزْرُ مَنْ عَمِلَ بِهَا مِنْ بَعْدِهِ مِنْ غَيْرِ أَنْ يَنْقُصَ مِنْ أَوْزَارِهِمْ شَىْءٌ  ‘যে ব্যক্তি ইসলামে কোন নিকৃষ্ট সুন্নাত (রীতি) চালু করল, অতঃপর তার অবর্তমানে সেটার উপরে আমল করা হ, তাহলে তার জন্য আমলকারীর সমান গোনাহ লেখা হবে, অথচ আমলকারীর গোনাহ সামান্যতম কম করা হবে না[1]
শারঈ পরিভাষায় সুন্নাত হল রাসূলুল্লাহ্ (ছাঃ)-এর ঐ সকল বাণী, যা দ্বারা তিনি কোন বিষয়ে আদেশ-নিষেধ, বিশ্লেষণ, মৌন সম্মতি ও সমর্থন দিয়েছেন এবং কথা ও কর্মের মাধ্যমে অনুমোদন করেছেন, যা সঠিকভাবে জানা যায় তাকে সুন্নাহ বলা হয়[2] অনুরূপভাবে ছাহাবী, তাবিঈ ও তাবে-তাবিঈদের আছার ও ফৎওয়াসমূহ অর্থাৎ তাদের ইজতেহাদ ও যেসব বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করেছেন, তাকেও সুন্নাহ বলে অভিহিত করা হয়যেমন রাসূল (ছাঃ) বলেন, فَعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِىْ وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِيْنَ الْمَهْدِيِّيْنَ  ‘তোমাদের উপরে অবশ্য পালনীয় হল আমার সুন্নাত ও সুপথ প্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাত[3]
সুন্নাহর গুরুত্ব : ইসলামী শরীআতের উৎস দুটি, পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছপবিত্র কুরআন যেমন আল্লাহর প্রেরিত অহী, ঠিক তেমনি সুন্নাহও রাসূল (ছাঃ)-এর অন্তরে প্রক্ষিপ্ত অহী
কুরআন পঠিত অহী, আর সুন্নাহ অপঠিত অহীপবিত্র কুরআনের পরই সুন্নাহর স্থানসুন্নাহ প্রকৃতপক্ষে আল-কুরআনের বিস্তারিত ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণরাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যে পূর্ণাঙ্গ দ্বীন মানব জাতিকে উপহার দিয়েছেন, সুন্নাহ মূলতঃ এরই বহিঃপ্রকাশতাই বলা হয়, পবিত্র কুরআন ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞানের হৃদপিন্ড স্বরূপআর সুন্নাহ এ হৃদপিন্ডের চলমান ধমনীহৃদপিন্ডের চলমান ধমনী যেমন দেহের সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের শোণিত ধারা সতেজ, সক্রিয় ও গতিশীল করে রাখে, সুন্নাহও অনুরূপ দ্বীন ইসলামকে  সতেজ, সক্রিয় ও গতিশীল রাখেএজন্যই ইসলামে ছহীহ সুন্নাহর গুরুত্ব অপরিসীম সুন্নাহ উন্নত ও মহামূল্যবান জ্ঞান সম্পদ হিসাবে সমাদৃতদ্বীন ইসলাম পূর্ণাঙ্গএই পূর্ণতা ধরে রাখতে সুন্নাহর ভূমিকা অপরিসীম কারণ যারা সুন্নাহর জ্ঞান থেকে বিমুখ তারা বিদআতী পথ অন্বেষণে সর্বদা ব্যস্ত সুন্নাহ ব্যতীত দ্বীন ইসলামের পূর্ণতা কল্পনা করা যায় না
কুরআনের মত সুন্নাহও অহী : পবিত্র কুরআন যেমন আল্লাহ প্রেরিত অহী, ঠিক তেমনি রাসূলের কথা, কাজ, মৌন সম্মতি তথা সুন্নাহও আল্লাহর অহী, যা রাসূল (ছাঃ)-কে জানিয়ে দেয়া হকুরআন ও সুন্নাহ উভয়টি জিব্রাঈল (আঃ)-এর মাধ্যমে অবতীর্ণ হয়েছে এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, وَأَنْزَلَ اللهُ عَلَيْكَ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ  ‘আল্লাহ তোমার প্রতি কিতাব (কুরআন) ও হিকমাত (সুন্নাহ) নাযিল করেছেন’ (নিসা ৪/১১৩)আর তিনি শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমাত’ (জুমুআ ৬২/২)অবশ্য কুরআন ও সুন্নাহ উভয়টির তথ্যসমূহ আল্লাহর পক্ষ থেকেই আগত[4] এ মর্মে রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, أَلاَ إِنِّىْ أُوتِيْتُ الْكِتَابَ وَمِثْلَهُ مَعَهُজেনে রাখ, নিশ্চয়ই আমাকে কুরআন ও তার সাথে অনুরূপ বিষয় (সুন্নাহ) দান করা হয়েছে[5]
হাসান বিনতে আতিয়া বলেন, জিব্রাঈল (আঃ) রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে সুন্নাহ নাযিল করতেন, যেভাবে কুরআন নাযিল করতেন[6] কুরআন প্রত্যক্ষ অহী ও হাদীছ অপ্রত্যক্ষ অহীকুরআন অহী মাতলূ যা তেলাওয়াত করা হয়কিন্তু হাদীছ গায়ের মাতলূ যা তেলাওয়াত করা হয় না[7] যার ভাষা ও অর্থ আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ, তাই কুরআনআর যার অর্থ আল্লাহর পক্ষ থেকে ও রাসূলের ভাষায় তা ব্যক্ত করেন, তাই হাদীছ ও সুন্নাহ[8] রাসূল (ছাঃ) বলেন, وَلْيَقْضِ اللهُ عَلَى لِسَانِ نَبِيِّهِ مَا شَاءَআল্লাহ যা পসন্দ করেন, তাঁর নবীর মুখ দিয়ে তা প্রকাশ করেন[9]
রাসুলুল্লাহ (ছাঃ) নিজের খেয়াল-খুশিমত কোন ফায়ছালা দিতেন না এবং ইচ্ছামত কোন কথা বলতেন না মহান আল্লাহ বলেন,وَمَا يَنْطِقُ عَنِ الْهَوَى، إِنْ هُوَ إِلاَّ وَحْيٌ يُوحَى، عَلَّمَهُ شَدِيْدُ الْقُوَىতিনি (রাসূল) তাঁর প্রবৃত্তির তাড়নায় কথা বলেন না কেবলমাত্র অতটুকু বলেন, যা তাঁর নিকটে অহী হিসাবে নাযিল করা হয়আর তাকে শিক্ষা  দান করে এক শক্তিশালী ফেরেশতা’ (নাজম ৫৩/৩-৫)হাদীছে এসেছে, একদা জনৈক ইহুদী আলেম রাসূল (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করল, পৃথিবীর কোন ভূখন্ড সর্বাপেক্ষা উত্তম? রাসূল (ছাঃ) বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর জিব্রাঈল (আঃ) এসে তা জানিয়ে দেয়ার পর বললেন, شَرُّ الْبِقَاعِ أَسْوَاقُهَا وَخَيْرُ الْبِقَاعِ مَسَاجِدُهَاসর্বনিকৃষ্ট স্থান হল বাজার ও সর্বোৎকৃষ্ট স্থান ল মসজিদ[10] অতএব সুন্নাহও কুরআনের মতই অহীএকে অস্বীকার করার কোন উপায় নেই
সুন্নাহ উপেক্ষার পরিণাম
মুসলিম হওয়ার জন্য কুরআন মেনে চলা যেমন আবশ্যক, তেমনি সুন্নাহ মেনে চলাও অপরিহার্যসুন্নাহকে বাদ দিয়ে কুরআন অনুসরণ করা অসম্ভবতেমনিভাবে সুন্নাহকে উপেক্ষা করলে পরকালে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন তে হবেএ সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হ।-
১. আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্যের পরিপন্থী :
পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ পাওয়ার পর তা উপেক্ষা করে যদি কেউ নিজের রায়কে প্রাধান্য দেয়, তাহলে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্যের পরিপন্থী হবেরাসূলের সুন্নাহকে পিছনে ফেলে অসম্মান করা, আল্লাহর আদেশের খেলাফ করার নামান্তর, যা হারাম
মহান আল্লাহ বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا لاَ تُقَدِّمُوْا بَيْنَ يَدَيِ اللهِ وَرَسُوْلِهِ وَاتَّقُوا اللهَ إِنَّ اللهَ سَمِيْعٌ عَلِيْمٌ، يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا لاَ تَرْفَعُوْا أَصْوَاتَكُمْ فَوْقَ صَوْتِ النَّبِيِّহে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সামনে অগ্রণী হয়ো নাআর আল্লাহকে ভয় কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞহে ঈমানদারগণ! তোমরা নবীর কন্ঠস্বরের উপর তোমাদের কন্ঠস্বর উচুঁ করো না’ (হুজুরাত ৪৯/১-২)নবীর কন্ঠস্বরল তাঁর রেখে যাওয়া সুন্নাতএই সুন্নাহকে অমান্য, অস্বীকার, পরিবর্তন, পরিমার্জন, পরিবর্ধন ও সংশোধনের নিমিত্তে যে সকল অপচেষ্টা সব কিছুই তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রসুতরাং এই কন্ঠরোধ করার অর্থ হল রাসূলে কথা তথা আল্লাহর অহী দুনিয়া থেকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলার সুপ্ত ষড়যন্ত্র
সর্বপ্রথম আল্লাহ ও তাঁর বিধান কুরআন এবং তারপর রাসূল (ছাঃ) ও তাঁর সুন্নাহর আনুগত্য করতে হবে অপরদিকে রাসূলের আনুগত্য ব্যতীত আল্লাহর সান্নিধ্য অসম্ভবআল্লাহ ও রাসূলের সম্পর্ক সম্পূরকযেমন আল্লাহ বিধানদাতা ও রাসূল বিধানের ব্যাখ্যাদাতা ও পথ প্রদর্শকতাই আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য মুমিন ব্যক্তির প্রধান বৈশিষ্ট্য মহান আল্লাহ বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا أَطِيْعُوا اللهَ وَأَطِيْعُوا الرَّسُوْلَহে ইমানদারগণ! তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আনুগত্য কর রাসূলের’ (নিসা ৪/৫৯)অন্যত্র তিনি বলেন, مَنْ يُطِعِ الرَّسُوْلَ فَقَدْ أَطَاعَ اللهَযে ব্যক্তি রাসূলের আনুগত্য করে, সে তো আল্লাহরই আনুগত্য করল’ (নিসা ৪/৮০)তিনি আরো বলেন, وَأَطِيْعُوا اللهَ وَالرَّسُوْلَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَআল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য কর, যাতে তোমরা অনুগ্রহ প্রাপ্ত হও’ (আলে ইমরান ৩/১৩২)
রাসূলের আনুগত্য ল আল্লাহর আনুগত্যএ সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, فَمَنْ أَطَاعَ مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم فَقَدْ أَطَاعَ اللهَ، وَمَنْ عَصَى مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم فَقَدْ عَصَى اللهَ  ‘যে ব্যক্তি মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর আনুগত্য করল, সে যেন আল্লাহর আনুগত্য করলআর যে ব্যক্তি মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর অবাধ্যতা করল, সে যেন আল্লাহরই অবাধ্যতা করল[11] অন্যত্র তিনি বলেন, فَمَنْ رَغِبَ عَنْ سُنَّتِىْ فَلَيْسَ مِنِّىযে ব্যক্তি আমার সুন্নাত হতে মুখ ফিরিয়ে নিল, সে আমার দলভুক্ত নয়[12]
রাসূলের সুন্নাহ তথা হাদীছের অনুসরণকে ওয়াজিব করে আল্লাহ কুরআনের অন্যূন ৪০ জায়গাতে বর্ণনা করেছে[13] আক্বীদা ও আহকাম সকল বিষয়ে হাদীছ হল চূড়ান্ত সিদ্ধান্তদানকারী[14] হাদীছের অনুসরণ ব্যতীত ইসলামের অনুসরণ কল্পনা করা যায় নাসুতরাং রাসূল (ছাঃ) আমাদের সম্মুখে যে সুন্নাত পেশ করেছেন, তা কোনরূপ বিকৃত ও বিরোধিতা না করে সঠিকভাবে গ্রহণ করা ওয়াজিবমহান আল্লাহ বলেন, وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُوْلُ فَخُذُوْهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوْاআর রাসূল তোমাদের যা দেন তোমরা তা গ্রহণ কর এবং যা কিছু নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক’ (হাশর ৫৯/৭)
সুন্নাহর বিরোধিতা ও তা বিকৃত করা কুফরী (আলে ইমরান ৩/৩২) তাছাড়া পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহ পৃথিবীর সকল মুমিন বান্দার জন্যে আমানত স্বরুপরাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, أَنَّ الأَمَانَةَ نَزَلَتْ فِى جَذْرِ قُلُوْبِ الرِّجَالِ، ثُمَّ عَلِمُوْا مِنَ الْقُرْآنِ، ثُمَّ عَلِمُوْا مِنَ السُّنَّةِনিশ্চয়ই আমানতকে মানুষের মূল অন্তঃকরণে নাযিল করা হয়েছেঅতএব তোমরা শিক্ষা গ্রহণ কর কুরআন হতেঅতঃপর শিক্ষা গ্রহণ কর সুন্নাত তে[15]
পার্থিব জীবনের সকল কর্মে কুরআন ও সুন্নাহর ফায়ছলা মেনে চলা ওয়াজিবমহান আল্লাহ বলেন, إِنَّمَا كَانَ قَوْلَ الْمُؤْمِنِيْنَ إِذَا دُعُوْا إِلَى اللهِ وَرَسُوْلِهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ أَنْ يَقُوْلُوْا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا وَأُوْلَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَমুমিনদের মধ্যে কোন ব্যাপারে ফায়ছালা করার জন্যে যখন তাদেরকে আল্লাহ ও রাসূলের (কুরআন ও সুন্নাহর) দিকে আহবান করা হয়, তখন তারা বলে, আমরা শুনলাম ও মেনে নিলামবস্ত্ততঃ তারাই হল সফলকাম(নূর ২৪/৫১)ছাহাবীগণ রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাতকে সসম্মানে মেনে চলতেনতার প্রমাণ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন মুআয ইবনে জাবাল (রাঃ)-কে ইয়েমেনের শাসনকর্তা নিযুক্ত করে পাঠান, তখন মুআয বলেন, ‘আমি আল্লাহর কিতাব ও সুন্নাত দ্বারা ফায়ছালা করব(দারেমী) যে কুরআন ও হাদীছের নিদ্ধান্ত মেনে না নেয়, সে মুনাফিকদুনিয়াতে তার উদাহরণ ছিদ্র হওয়া পাত্রের মত, যতই পানি ভরার চেষ্টা করে, তা পূর্ণ হয় না অনুরূপভাবে তার আমলে ছালেহ বা নেক আমল নষ্ট হয়ে যায়
২. আমলে ছালেহ বিনষ্ট হওয়া :
আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্যের পরিপন্থী আমল করলে অর্থাৎ পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহ্কে অবমাননা করার ফলে উত্তম আমলগুলো বিনষ্ট হয়ে যায় যদিও মানুষ ভাবে যে, সে দুনিয়ার বুকে ভাল আমল করে চলেছেঅথচ সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরাগ ভাজন হচ্ছেএ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا أَطِيْعُوا اللهَ وَأَطِيْعُوا الرَّسُوْلَ وَلاَ تُبْطِلُوْا أَعْمَالَكُمْহে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর এবং স্বীয় আমল বিনষ্ট কর না’ (মুহাম্মাদ ৪৭/৩৩)তিনি আরো বলেন, قُلْ هَلْ نُنَبِّئُكُمْ بِالْأَخْسَرِيْنَ أَعْمَالاً، الَّذِيْنَ ضَلَّ سَعْيُهُمْ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَهُمْ يَحْسَبُوْنَ أَنَّهُمْ يُحْسِنُوْنَ صُنْعًاতুমি বল, আমি কি তোমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত আমলকারীদের সম্পর্কে খবর দিব? দুনিয়ার জীবনে যাদের সমস্ত আমল বরবাদ হয়েছেঅথচ তারা ভাবে যে, তারা সুন্দর আমল করে যাচ্ছে’ (কাহ্ফ ১৮/১০৩-১০৪)অন্যত্র তিনি বলেন, وَمَنْ يَكْفُرْ بِالْإِيْمَانِ فَقَدْ حَبِطَ عَمَلُهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِيْنَযে ব্যক্তি বিশ্বাসের বিষয় (কুরআন-সুন্নাহ) অস্বীকার করে, তার সকল শ্রম বিফলে যাবে এবং পরকালে সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে’ (মায়েদা ৫/৫)আল্লাহ তাআলা আরো বলেন,إِنَّ اللهَ خَبِيْرٌ بِمَا تَعْمَلُوْنَনিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের আমল সম্পর্কে অবগত আছেন’ (নূর ২৪/৫৩)তিনি আরো বলেন, فَاسْتَقِمْ كَمَا أُمِرْتَ وَمَنْ تَابَ مَعَكَ وَلاَ تَطْغَوْا إِنَّهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِيْرٌঅতএব তুমি ও তোমার সাথে যারা তওবা করেছে, সবাই সোজা-সরল পথে চলে যাও, যেমন তোমাকে হুকুম দেয়া হয়েছে এবং সীমালংঘন করবে না’ (হূদ ১১/১১২) বিশ্বাসের বিষয় হ পবিত্র কুরআনের একটি আয়াত কিংবা ছহীহ হাদীছের একটি অংশও কোনভাবেই অস্বীকার করা যাবে নাআর যদি কেউ অস্বীকার করে কিংবা রদবদল করে পালন করে, তবে সে ব্যক্তি পরকালে ক্ষতিগ্রস্ত হবে
এখানে (استقم ) -এর ব্যাখ্যা হল রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যে সুষ্ঠু ও সঠিক মূলনীতি শিক্ষা দিয়েছেন তার মধ্যে বিন্দুমাত্র হরাস-বৃদ্ধি বা পরিবর্ধন-পরিমার্জনকারী পথভ্রষ্ট হবেতার নিয়ত যতই ভাল হোক না কেনতাছাড়া আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করার লক্ষ্যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যে নির্দেশ দিয়েছেন, তার মধ্যে কোনরূপ কমতি বা গাফলতি মানুষকে যেমন ইস্তেকামাতের আদর্শ হতে বিচ্যুত করে অনুরূপভাবে তার মধ্যে নিজের পক্ষ হতে বাড়াবাড়ি মানুষকে বিদআতে লিপ্ত করে যদিও সে মনে করে, আমি আল্লাহর সন্তুষ্টি হাছিল করছিঅথচ ক্রমান্বয়ে সে আল্লাহর বিরাগভাজন তে থাকে[16]
৩. গোমরাহীর পথে পরিচালিত হওয়া :
কোন ছহীহ হাদীছকে বিকৃত কিংবা সামান্যতম পরিবর্তন করা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্যের পরিপন্থীসেই সাথে ঐ সকল ব্যক্তির আমলে ছালেহ বিনষ্ট হয় এবং ইস্তিক্বামাতের রাস্তাচ্যুত হয়ে গোমরাহীর পথে পরিচালিত হয়অতঃপর তার শেষ পরিণাম হয় অত্যন্ত ভয়াবহ স্থান জাহান্নাম মহান আল্লাহ বলেন, وَمَنْ يَعْصِ اللهَ وَرَسُوْلَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلاَلاً مُبِيْنًاযে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানী করল, সে স্পষ্ট পথভ্রষ্টতার মধ্যে পতিত হ’ (আহযাব ৩৩/৩৬)যারা আল্লাহর বিধানের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে এবং আলোর বিনিময়ে অন্ধকার ও উত্তমের বিনিময়ে মন্দকে ক্রয় করে থাকে, তারাই অধিক পথভ্রষ্টমহান আল্লাহ বলেন, اللهَ نَزَّلَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ وَإِنَّ الَّذِيْنَ اخْتَلَفُوْا فِي الْكِتَابِ لَفِيْ شِقَاقٍ بَعِيْدٍ  ‘আল্লাহ নাযিল করেছেন সত্যপূর্ণ কিতাবআর যারা কিতাবের মাঝে মতবিরোধ সৃষ্টি করেছে, নিশ্চয়ই তারা যিদের বশবর্তী হয়ে (ভ্রষ্টপথে) অনেক দূরে চলে গেছে’ (বাক্বারাহ ২/১৭৬)এদের পরিচয় দিয়ে আল্লাহ বলেন, أُولَئِكَ الَّذِيْنَ اشْتَرَوُا الضَّلاَلَةَ بِالْهُدَى وَالْعَذَابَ بِالْمَغْفِرَةِ  ‘এরাই হল সে সমস্ত লোক যারা হেদায়াতের বিনিময়ে গোমরাহী এবং ক্ষমা ও অনুগ্রহের বিনিময়ে আযাব খরিদ করেছে’ (বাক্বারাহ ২/১৭৫)
ঐ সকল ব্যক্তিকে সুন্নাত বিকৃত করা থেকে নিবৃত্ত হতে বললে, তারা বাপ-দাদার রায়কে সঠিক বলে মনে করে এবং তাদের পৈতৃক বিধানের উপর অবিচল থাকে মহান আল্লাহ বলেন, وَإِذَا قِيْلَ لَهُمْ تَعَالَوْا إِلَى مَا أَنْزَلَ اللهُ وَإِلَى الرَّسُوْلِ قَالُوْا حَسْبُنَا مَا وَجَدْنَا عَلَيْهِ آبَاءَنَاযখন তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান এবং রাসূলের দিকে এসো, তখন তারা বলে, আমাদের জন্যে তাই যথেষ্ট যার উপর আমরা আমাদের বাপ-দাদাকে পেয়েছি’ (মায়েদা ৫/১০৪)আবার তাদেরকে কুরআন ও সুন্নাহর প্রতি আকৃষ্ট হতে বললে, তারা নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে থাকে এবং অনুমানের ভিত্তিতে কথা বলে
পক্ষান্তরে আল্লাহর ভালবাসা ও ক্ষমা লাভের জন্য রাসূল (ছাঃ)-এর আনুগত্যের কোন বিকল্প নেইমহান আল্লাহ বলেন,  قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّوْنَ اللهَ فَاتَّبِعُوْنِيْ يُحْبِبْكُمُ اللهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ وَاللهُ غَفُوْرٌ رَحِيْمٌবল, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাসতে চাও, তবে আমার অনুসরণ কর, তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালবাসবেন এবং তোমাদের গুনাহ ক্ষমা করে দিবেনকারণ আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াবান’ (আলে ইমরান ৩/৩১)অন্যত্র তিনি বলেন,فَإِنْ لَمْ يَسْتَجِيْبُوْا لَكَ فَاعْلَمْ أَنَّمَا يَتَّبِعُوْنَ أَهْوَاءَهُمْ وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنِ اتَّبَعَ هَوَاهُ بِغَيْرِ هُدًى مِنَ اللهِঅতঃপর তারা যদি তোমার কথায় সাড়া না দেয়, তবে জানবে, তারা শুধু নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করেআল্লাহর হেদায়াতের (কুরআন ও সুন্নাহ) পরিবর্তে যে ব্যক্তি নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, তার চাইতে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে?’ (কাছাছ ২৮/৫০)কোন কোন সময় মানুষ সংখ্যাধিক্যের দোহাই দিয়ে কুরআন-হাদীছের শিক্ষা ও সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করেঅথচ সংখ্যা কখনও হকের মানদন্ড নয়যেমন আল্লাহ বলেন, وَإِنْ تُطِعْ أَكْثَرَ مَنْ فِي الْأَرْضِ يُضِلُّوْكَ عَنْ سَبِيْلِ اللهِ إِنْ يَتَّبِعُوْنَ إِلاَّ الظَّنَّ وَإِنْ هُمْ إِلاَّ يَخْرُصُوْنَযদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল তবে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করে দিবেতারা তো শুধু ধারণার অনুসরণ করে এবং তারা কেবল অনুমানভিত্তিক কথা বলে’ (আনআম ৬/১১৬)অথচ সত্যের মুকাবিলায় ধারণার কোন মূল্য নেই’ (নাজম ৫৯/২৮)হক্ব কথার পর সবই ভ্রান্তযে ব্যক্তি নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে অনুমানের ভিত্তিতে কথা বলে, সে সুন্নাত থেকে বেরিয়ে পথভ্রষ্ট হয়ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) বলেন, তোমরা দ্বীনের ব্যাপারেরায়অনুযায়ী কোন কথা বল নাতোমাদের কর্তব্য হল সুন্নাহর অনুসরণ করাযে ব্যক্তি সুন্নাত থেকে বেরিয়ে গেল, সে পথ ভ্রষ্ট হ[17]
দ্বীন আমাদের নিকটে পৌঁছেছে পূর্ণাঙ্গরূপেতাতে কোন কিছু যোগ-বিয়োগ করার প্রয়োজন নেইমহান আল্লাহ বলেন,الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ  ‘আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম’ (মায়েদা ৫/৩) পূর্ণতা বলতে কুরআন ও সুন্নাহর সকল ইলমবিশিষ্ট তাবেঈ ইবনে সীরীন (৩৩-১১০হিঃ) বলেছেন, إِنَّ هَذَا الْعِلْمَ دِيْنٌ فَانْظُرُوْا عَمَّنْ تَأْخُذُوْنَ دِيْنَكُمْনিশ্চয়ই কুরআন-সুন্নাহর জ্ঞানটাই হল দ্বীনঅতএব তোমরা দেখ, কার নিকট থেকে দ্বীন গ্রহণ করছ[18]
ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধানতার প্রমাণ হল বিদায় হজ্জের ভাষণে সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে রাসূল (ছাঃ)-এর ভাষণতিনি বললেন, وَأَنْتُمْ تُسْأَلُوْنَ عَنِّىْ فَمَا أَنْتُمْ قَائِلُوْنَ. قَالُوْا نَشْهَدُ أَنَّكَ قَدْ بَلَّغْتَ وَأَدَّيْتَ وَنَصَحْتَ. فَقَالَ بِإِصْبَعِهِ السَّبَّابَةِ يَرْفَعُهَا إِلَى السَّمَاءِ وَيَنْكُتُهَا إِلَى النَّاسِ اللَّهُمَّ اشْهَدِ اللَّهُمَّ اشْهَدْ.ক্বিয়ামতের দিন আমার সম্পর্কে তোমাদের প্রশ্ন করা হবেসেই দিন কি জবাব দিবে? সকলে সমস্বরে বলল, আমরা স্বাক্ষ্য দিচ্ছি, আপনি আল্লাহর আহকাম রিসালা ও নবুওয়াতের হক্ব আদায় করেছেন এবং সকল বিষয়ে উপদেশ দান করেছেননবী করীম (ছাঃ) স্বীয় শাহাদাত আঙ্গুল আকাশের দিকে উঠিয়ে মানুষের দিকে ঝুকাতে ঝুকাতে বললেন, হে আল্লাহ! স্বাক্ষী থাকুন, স্বাক্ষী থাকুন, স্বাক্ষী থাকুন[19] সুতরাং দ্বীনের মধ্যে কোন রকম সংযোজন-বিয়োজনের প্রয়োজন নেই
এরপরেও যারা দ্বীন (কুরআন ও সুন্নাহ) নিয়ে বিতর্কে লিপ্ত হবে আল্লাহ তাদেরকে আযাব ও গযবের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সতর্ক করেছেনমহান আল্লাহ বলেন, وَالَّذِيْنَ يُحَاجُّوْنَ فِي اللهِ مِنْ بَعْدِ مَا اسْتُجِيْبَ لَهُ حُجَّتُهُمْ دَاحِضَةٌ عِنْدَ رَبِّهِمْ وَعَلَيْهِمْ غَضَبٌ وَلَهُمْ عَذَابٌ شَدِيْدٌআল্লাহর দ্বীন মেনে নেয়ার পর যারা সে সম্পর্কে বিতর্কে প্রবৃত্ত হয়, তাদের বিতর্ক তাদের পালনকর্তার কাছে বাতিল, তাদের প্রতি আল্লাহর গযব ও তাদের জন্য রয়েছে কঠোর আযাব’ (শূরা ৪২/১৬)
হাদীছের কিয়দংশও বিকৃত হলে কিংবা বিরোধিতা করলে ফিৎনায় পড়া অবশ্যম্ভাবী যেমন আল্লাহ বলেন, الَّذِيْنَ يُخَالِفُوْنَ عَنْ أَمْرِهِ أَنْ تُصِيْبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيْبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيْمٌযারা রাসূলের আদেশ-নিষেধের বিরোধিতা করে, তারা যেন এ বিষয়ে ভয় করে যে, তাদেরকে (দুনিয়ায়) আক্রান্ত করবে নানাবিধ ফিৎনা এবং (পরকালে) গ্রাস করবে মর্মান্তিক আযাব’ (নূর ২৪/৬৩)
রাসূল (ছাঃ) আমাদের নিকটে পূর্ণাঙ্গ পরিচ্ছন্ন দ্বীন নিয়ে এসেছেনতিনি বলেছেন, لَقَدْ جِئْتُكُمْ بِهَا بَيْضَاءَ نَقِيَّةًআমি তোমাদের নিকটে এসেছি, একটি স্পষ্ট ও পরিচ্ছন্ন দ্বীন নিয়ে[20]  এ দ্বীনের মধ্যে নতুন কিছু সৃষ্টি করতে তিনি কঠিনভাবে নিষেধ করেছেনতিনি বলেন, وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الأُمُوْرِ فَإِنَّ كُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلاَلَةٌ  ‘আর দ্বীনের মধ্যে নতুন কিছু সংযোজনের ব্যাপারে সাবধান থাকবেকারণ প্রতিটি নতুন সংযোজনই বিদআতআর প্রতিটি বিদআতই গোমরাহী[21]
দ্বীনের মধ্যে নতুন কোন কিছু সৃষ্টি করা রাসূলের প্রতি মিথ্যারোপের শামিলএর পরিণতি হ জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হওয়ারাসূল (ছাঃ) বলেন, مَنْ يَقُلْ عَلَىَّ مَا لَمْ أَقُلْ فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِযে ব্যক্তি আমার নামে এমন কোন কথা বলে, যা আমি বলিনি, সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে করে নেয়[22]
ছাহাবীগণ জীবিত থাকা অবস্থায় দ্বীনের মধ্যে নতুন নতুন মত ও প্রথা চালু হয়েছিলযেমন একদা আবু মূসা আশআরী (রাঃ) ইবনু মাসউদ (রাঃ)-কে মসজিদে ডেকে দেখালেন কিছু লোক দলে দলে বসে কংকর নিয়ে ১০০ বার তাকবীর, তাসবীহ, তাহলীল গণনা করেছেতা দেখে তিনি বললেন, হে মুহাম্মাদের উম্মত! ধিক, তোমাদের ধ্বংস আসন্নএখনও নবীর ছাহাবীগণ জীবিতআল্লাহর কসম! আজ মনে হচ্ছে তোমরা মুহাম্মাদের দ্বীন (কুরআন ও সুন্নাহ) হতে আরও বেশী সঠিক পথে আছ কিংবা ভ্রষ্টতার দ্বার খুলে দিয়েছঐ সকল ব্যক্তিরা বলল, আমরা এর মাধ্যমে উত্তম আমল করারই ইচ্ছা পোষণ করেছিতিনি বললেন, এমন কতক ব্যক্তি আছে, যারা কল্যাণ চায় বটে, কিন্তু কল্যাণ লাভ করতে পারে না[23]
অন্যত্র এসেছে, মারওয়ান মদীনার গভর্ণর থাকাবস্থায় ঈদের ছালাতের পূর্বে মিম্বারে দাঁড়িয়ে খুৎবা দেয়ার প্রচলন করেনকিন্তু আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) এই পদ্ধতির প্রতিবাদ করেছিলেনকেননা এটা সুন্নাত বিরোধী আমল এবং দ্বীন ইসলামে তা বিদআত[24]
বিদআদ সম্পর্কে ইবনে আববাস (রাঃ) বলেছেন, من أحدث رأيا ليس في كتاب الله ولم تمض به سنة من رسول الله صلى الله عليه و سلم لم يدر علي ما هو منه إذا لقي الله عز و جل অর্থাৎ যে ব্যক্তি (দ্বীনের মধ্যে) এমন বিষয় উদ্ভাবন করল, যা আল্লাহর কিতাবে নেই এবং রাসূলের সুন্নাতে পাওয়া যায় না, আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তার স্থান কোথায় হবে সে তা জানে না[25]
এছাড়া বিদআতী ব্যক্তি সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেছেন,
(১) যে ব্যক্তি কোন বিদআতীকে সাহায্য করে, আল্লাহ তাকে লানত করেন[26]
(২) যে বিদআতীকে সম্মান করল, সে ইসলাম ধ্বংসে সাহায্য করল[27]
(৩) যে বিদআতীকে আশ্রয় দিল, তার প্রতি আল্লাহর অভিশাপ[28]
(৪) নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রত্যেক বিদআতীর থেকে তওবাকে আড়াল করে রাখেন, যতক্ষণ না সে বিদআত পরিহার করে[29]
(৫) নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রত্যেক বিদআতীর তওবা প্রত্যাখ্যান করেন[30]
(৬) আল্লাহ প্রত্যেক বিদআতীর আমল প্রত্যাখ্যান করেন, যতক্ষণ না সে বিদআত পরিহার করে[31]
সুন্নাত ও বিদআত সম্পর্কে সালাফে ছালেহীনের উক্তি- 
(১) খলীফা আবূ বকর (রাঃ) বলেছেন, ‘সুন্নাতই হল আল্লাহর মযবূত রজ্জু
(২) ওমর (রাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সুন্নাত ত্যাগ করল, সে কুফরী করলঅন্যত্র তিনি বলেন, ‘যারা নিজ রায়ের ভিত্তিতে কথা বলে, তারা সুন্নাতের শত্রু।...তারা নিজেরা পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং অন্যদেরও বিপথগামী করেছে
(৩) আববাস (রাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সুন্নাতের বিরোধিতা করে, সে নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, যদিও তার গলা কাটা যায়
(৪) ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, ‘প্রতি বছরই লোকজন একটি বিদআত চালু করছে এবং একটি সুন্নাতকে মেরে ফেলছেশেষ পর্যন্ত বিদআতই জীবন্ত হবে এবং সুন্নাত মৃত্যু বরণ করবে[32]
অতএব দ্বীনের মূলনীতির কোন বিকৃতি করা চলবে নাযদি কেউ তা করে, তবে সে স্পষ্ট কুফরী করবে
৪. জাহান্নামী হওয়া :
যারা কুরআন ও সুন্নাহর  নির্দেশ মোতাবেক ফায়ছালা করে না, তারা আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি যুূলুম করেমহান আল্লাহ বলেন, وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُوْنَযারা আল্লাহর দেয়া বিধান অনুসারে ফায়ছালা করে না, তারা কাফের’ (মায়েদা ৫/৪৪), তারা যালেম (মায়েদা ৫/৪৫), তারা ফাসেক (মায়েদা ৫/৪৭)
আল্লাহর বিধান অমান্যকারী কাফের, যালেম ব্যক্তির আবাসস্থল জাহান্নামমহান আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও রাসূলের নাফরমানী করল, তার জন্য জাহান্নাম নির্ধারিত হসেখানে সে চিরস্থায়ীভাবে অবস্থান করবে (জ্বিন ৭২/২৩)তাতে ঊনিশজন কর্মচারী নিয়োজিত রয়েছে (মুদ্দাছছির ৭৪/৩০) তাদেরকে বলে দাও, গ্রীষ্মের প্রখর তাপ অপেক্ষা জাহান্নামের আগুন আরও কঠিন ও ভয়াবহযদি তারা বুঝত (তওবা ৯/৮১), এটি অতীব নিকৃষ্ট আবাসস্থল (বাক্বারাহ ২/২০৬; ইমরান ৩/১৬২, ১৯৭)
আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য হল- পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহতে যা কিছু আদেশ করা হয়েছে তা কোনরূপ বিকৃত না করে পালন করা এবং যা নিষেধ করা হয়েছে তা মেনে চলাএ মর্মে রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, فَإِذَا أَمَرْتُكُمْ بِشَىْءٍ فَخُذُوْا مِنْهُ مَا اسْتَطَعْتُمْ وَإِذَا نَهَيْتُكُمْ عَنْ شَىْءٍ فَانْتَهُوْا  ‘যখন আমি তোমাদেরকে কোন কিছুর হুকুম করি, তখন সেটা যথাসাধ্য পালন কর, আর আমি যখন কোন কিছু নিষেধ করি, তখন তোমরা সেটা থেকে বিরত থাক[33]
যে ব্যক্তি রাসূলের আনুগত্য করল, সে জান্নাতে যাবেআর যে অমান্য করল সে জাহান্নামের চিরস্থায়ী বাসিন্দা হবে এবং আফসোস করে তারা বলবে, হায় আফসোস! আমি যদি রাসূলের সাথে পথ অবলম্বন করতামহায় আমার দুর্ভাগ্য! আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম (ফুরকান /২৭-২৮) সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, كُلُّ أُمَّتِىْ يَدْخُلُوْنَ الْجَنَّةَ، إِلاَّ مَنْ أَبَى. قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ وَمَنْ يَأْبَى قَالَ مَنْ أَطَاعَنِىْ دَخَلَ الْجَنَّةَ، وَمَنْ عَصَانِىْ فَقَدْ أَبَىআমার প্রত্যেক উম্মত জান্নাতে যাবেকেবল তারা ব্যতীত, যারা অসম্মত হবে জিজ্ঞেস করা হল অসম্মত কারা? তিনি বললেন, যারা আমার অবাধ্যতা করবে, তারাই হল অসম্মত[34] এই অবাধ্য ব্যক্তিরা রাসূলের সুন্নাতকে পরিবর্তন করে এবং তাতে নতুন নতুন কথা, কাজের উদ্ভাবন করেঅথচ এই নতুন সৃষ্টি থেকে বেঁচে থাকার জন্য রাসূল (ছাঃ) নির্দেশও দিয়েছেন তিনি বলেন,وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الأُمُوْرِ فَإِنَّ كُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلاَلَةٌতোমরা প্রত্যেক নতুন সৃষ্টি হতে বেঁচে থাককেননা প্রত্যেকটি নতুন সৃষ্টিই বিদআত এবং প্রত্যেক বিদআতই গোমরাহীআর প্রত্যেক গোমরাহী জাহান্নাম[35]
দ্বীনের নামে ছওয়াবের আশায় কিংবা নিজের ইচ্ছামত আমলকারী বিদআতী ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-এর শাফাআত থেকে বঞ্চিত হবেএ সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,
وَإِنَّهُ سَيُجَاءُ بِرِجَالٍ مِنْ أُمَّتِىْ، فَيُؤْخَذُ بِهِمْ ذَاتَ الشِّمَالِ. فَأَقُولُ يَا رَبِّ أُصَيْحَابِى. فَيَقُولُ إِنَّكَ لاَ تَدْرِى مَا أَحْدَثُوْا بَعْدَكَ. فَأَقُوْلُ كَمَا قَالَ الْعَبْدُ الصَّالِحُ (وَكُنْتُ عَلَيْهِمْ شَهِيْدًا مَا دُمْتُ فِيْهِمْ) إِلَى قَوْلِهِ (الْحَكِيمُ) قَالَ فَيُقَالُ إِنَّهُمْ لَمْ يَزَالُوْا مُرْتَدِّيْنَ عَلَى أَعْقَابِهِمْ-
সাবধান হয়ে যাও, আমার উম্মতের কিছু লোককে ধরে আনা হবে তাদেরকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাওয়া হবেতখন আমি বলব, হে আমার রব! এরা তো আমার উম্মতজবাবে আমাকে বলা হবে, তুমি জান না তোমার (ওফাতের) পরে এরা কত নতুন (হাদীছ) কথা তৈরী করেছিলআমি তখন আল্লাহর সৎ বান্দা (ঈসার) মত বলব, ‘যতদিন আমি তাদের মধ্যে ছিলাম, ততদিন আমি ছিলাম তাদের রক্ষণাবেক্ষণকারীকিন্তু আমার পরে তুমিই তাদের সাক্ষীতখন বলা হবে, তুমি এদের কাছ থেকে প্রত্যাবর্তন করার পর, এরা (তোমার দ্বীন তথা কুরআন-সুন্নাহ থেকে) মুখ ফিরিয়ে নিয়ে উল্টো পথে চলেছিল[36]
শুধু তাই নয়, ঐ সমস্ত বিদআতী ব্যক্তিরা হাউযে কাউছারের পানি পান করতে পারবে নাতৃষ্ণার্ত অবস্থায় তাদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবেরাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘হাউযে কাউছারের অজস্র কল্যাণ আছে এবং হাউযে কাউছারে আমার উম্মত পানি পান করতে যাবেএর পান পাত্রের সংখ্যা আকাশের নক্ষত্রসম হবেতখন কতক ব্যক্তিকে ফেরেশতাগণ হাউযে কাউছার থেকে সরিয়ে দিবেনআমি বলব, হে আমার রব! তারা তো আমার উম্মতআল্লাহ বলবেন, তুমি জান না তোমার পরে তারা কি নতুন মত ও পথ (বিদআত) অনুসরণ করেছিল[37]
কুরআন ও সুন্নাহ উভয়ের বাহক ও প্রচারক হলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)অতএব সুন্নাহকে অস্বীকার করা কিংবা নতুন কিছু উদ্ভাবন করার উদ্দ্যেশ্যই হল রাসূল (ছাঃ)-কে পরোক্ষভাবে অস্বীকার করা (নাউযুবিল্লাহ) যার পরিণাম জাহান্নাম
পরিশেষে বলব, ইলমে দ্বীন ক্রমান্বয়ে দুর্বল রশির মত ক্ষয়ে চলেছেইলমের ধারক-বাহক আলেম সমাজকে অবশ্যই সাবধান হতে হবেকেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহ ইলম (কুরআন ও সুন্নাহর জ্ঞান) এমনভাবে উঠিয়ে নিবেন না, যাতে লোকদের থেকে তা ছিনিয়ে নেয়া হয়বরং আলেমদের ইন্তিকালের মাধ্যমে ইলমকে উঠিয়ে নিবেন
এমনকি পরিশেষে একজন বিদ্বান ব্যক্তিও জীবিত থাকবে নাতখন লোকেরা জাহেল (মূর্খ) ব্যক্তিদেরকে তাদের ইমাম (নেতা) বানাবেআর তাদের কাছে মাসআলা-মাসায়েল জিজ্ঞেস করবে, তারা ইলম ছাড়াই ফায়ছালা দিবেএভাবে তারা নিজেরা বিপথগামী হবে এবং লোকদেরকেও বিপথে পরিচালিত করবে[38] অতএব আসুন, আমরা সকলে ইসলামকে জীবন-বিধান হিসাবে সঠিকভাবে মান্য করে পরকালীন জীবনে নাজাত লাভের পথকে সুগম করিআল্লাহ আমাদের সকলকে তাওফীক দান করুন- আমীন!


[1]. মুসলিম হা/১০১৭; নাসাঈ হা/২৫৫৪; মিশকাত হা/২১০
[2]. শাইখ যাকারিয়া আল-আনছারী, ফাতহুল বাকী আলা আলফাযিল ইরাকী (বৈরুত: দারুল কুতুবিাল ইলমিয়্যাহ, তা.বি.), পৃঃ ১২
[3]. তিরমিযী হা/২৬৭৬; ইবনু মাজাহ হা/৪৩; মিশকাত হা/১৬৫, সনদ ছহীহ
[4]. তাফসীর মাআরেফুল কুরআন, ২৮২ পৃঃ  
[5]. আবু দাউদ হা/৪৬০৪; মিশকাত হা/১৬৩
[6]. আশ-শারহুল ইবানা, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের পরিচিতি
[7]. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, হাদীছের প্রামাণিকতা, পৃঃ ৫
[8]. তাফসীর মাআরেফুল কুরআন, পৃঃ ১৩০৩
[9]. বুখারী হা/৬০২৭
[10]. আহমাদ, ইবনু হিববান, হাকেম, মিশকাত হা/৭৪১, সনদ হাসান
[11]. বুখারী হা/৭২৮১; মিশকাত হা/১৪৪, ‘কুরআন-সুন্নাহকে অাঁকড়ে ধরাঅনুচ্ছেদ
[12]. বুখারী হা/৫০৬৩; মুসলিম হা/১৪০১; মিশকাত হা/১৪৫  
[13]. হাদীছের প্রামাণিকতা, পৃঃ ৮ 
[14]. তদেব, পৃঃ ১১
[15]. বুখারী হা/৬৪৯৭
[16]. তাফসীর মাআরেফুল কুরআন, পৃঃ ৬৪৫
[17]. হাদীছের প্রামাণিকতা, পৃঃ ৩৮ গৃহীতঃ শারানী, মীযানুল কুবরা ১/৬৩ পৃঃ
[18]. মুক্বাদ্দামা মুসলিম, মিশকাত হা/২৭৩ ইলমঅধ্যায়
[19]. মুসলিম হা/১২১৮ বিদায় হজ্জঅনুচ্ছেদ; আবু দাউদ হা/১৯০৭; মিশকাত হা/২৫৫৫
[20]. আহমাদ, বায়হাকী, মিশকাত হা/১৭৭, সনদ ছহীহ
[21]. আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, মিশকাত হা/১৬৫, সনদ ছহীহ  
[22]. বুখারী হা/১০৯; মিশকাত হা/৫৯৪০
[23]. সিলসিলা ছহীহাহ হা/২০০৫; দারেমী হা/২০৪
[24]. বুখারী ২/৯০৮, ‘মিম্বর না নিয়ে ঈদগাহে গমনঅনুচ্ছেদ
[25]. সুনান দারেমী, হা/১৫৮, সনদ ছহীহ; আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের পরিচিতি, পৃঃ ৩০
[26]. মুসলিম হা/১৩৬৬
[27]. মিশকাত হা/১৮৯; তারাজুআত হা/৫৯, সনদ হাসান
[28]. মুসলিম হা/১৯৭৮; মিশকাত হা/৪০৭০
[29]. ত্বাবারানী, ছহীহ তারগীব হা/৫৪
[30]. ছহীহুল জামেহা/১৬৯৯
[31]. সুনান ইবনু মাজাহ হা/৫০; তারাজুআত হা/২৫
[32]. আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের পরিচিতি, পৃঃ ৪২-৫৫
[33]. মুসলিম হা/১৩৩৭; ইবনু মাজাহ হা/২; মিশকাত হা/২৫০৫
[34]. বুখারী হা/৭২৮০; মিশকাত হা/১৪৩
[35]. আবু দাউদ হা/৪৬০৯; মিশকাত হা/১৬৫; ছহীহাহ হা/২৭৩৫
[36]. বুখারী হা/৪৩৭৯ যেমন আমি প্রথম সৃষ্টি করেছিলামঅনুচ্ছেদ
[37]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৫৩৫, ‘কিয়ামাতের অবস্থা সমূহ ও সৃষ্টির সূচনাঅধ্যায়, ‘হাশরঅনুচ্ছেদ
[38]. বুখারী, মুসলিম, রিয়াযুছ ছলেহীন, ৩/১৩৯২ কিতাবুল ইলম   

No comments: