• আমাদের দাওয়াত : সকল বিধান বাতিল কর, অহি-র বিধান কায়েম কর। আসুন! পবিত্র কুর‘আন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে জীবন গড়ি।

23 October, 2016

ইসলামে হালাল ব্যবসা ও অর্থনীতির রূপরেখা


ইসলাম একটি শাশ্বত, সার্বজনীন ও পূর্ণাঙ্গ জীনব ব্যবস্থাসৃষ্টি জগতে এমন কোন দিক ও বিভাগ নেই, যেখানে ইসলাম নিখুঁত ও স্বচ্ছ দিক-নির্দেশনা প্রদান করেনিমহান আল্লাহ বলেনمَا فَرَّطْنَا فِي الْكِتَابِ مِنْ شَيْءٍ আমরা এ কিতাবে কোন কিছুই অবর্ণিত রাখিনি (মায়েদাহ ৫/৩৮)
মানবতার মুক্তির দিশারী মুহাম্মাদ (ছাঃ) অন্ধকারাচ্ছন্ন, পাপ-পঙ্কিলতাময় এ বসুন্ধরায় জাহেলিয়াতের সকল অন্যায়-অত্যাচার, অবিচার-অশান্তি, অস্থিতিশীল অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বন্ধ করে দিয়েছিলেনবিশেষ করে মানব নিষ্পেষণ ও সমাজ বিধ্বংসী অন্যতম মাইন সূদ, ঘুষ, লটারী ও মজুতদারী প্রভৃতি তিরোহিত করেনআল্লাহ প্রেরিত সর্বশেষ অহি-র আলোকে হালাল ব্যবসা ভিত্তিক একটি সর্বোত্তম, অভূতপূর্ব আদর্শ সমাজ বিনির্মাণ করেছিলেনব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, এক কথায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই ইসলামের রয়েছে সঠিক কল্যাণকামী দিক নির্দেশনাThe Quran in everyday life গ্রন্থকার বলেন, All individual, Social, political, Finential and others problems which relating with human being, human welfare or human nature have been Completely discussed in the Quran. ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং অন্যান্য সমস্যাবলী যা মানবজাতি, মানবকল্যাণ অথবা মানব প্রকৃতির সাথে সম্পর্কিত তার সবই পূর্ণাঙ্গভাবে আলোচিত হয়েছে আল-কুরআনে
সূদ সমাজ শোষণের অন্যতম হাতিয়ার এবং মানব সভ্যতার সবচেয়ে নিষ্ঠুর শত্রুসূদী কারবারের ফলে সমাজের বিত্তশালীরা সমাজের অসহায়, নিঃস্ব, দরিদ্র বনু আদমের সম্পদ জোঁকের মত চুষে চুষে খেয়ে পাহাড় গড়ে তুলেপক্ষান্তরে সমাজের হতভাগ্য হতদরিদ্র মানুষগুলো দিন দিন অর্থশূন্য হয়ে ধুঁকে ধুঁকে মরেকিন্তু ইসলাম সাম্যের ধর্মতাই সূদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতির সর্বনাশা রাহুগ্রাস থেকে মানব জাতিকে রক্ষা করতে ইসলাম সকল প্রকার সূদকে চিরতরে হারাম করে ইনছাফপূর্ণ সুষম অর্থনৈতিক ব্যবস্থা কায়েম করেছেসাথে ব্যবসা ভিত্তিক অর্থনৈতিক লেনদেনের নির্দেশ দিয়েছে। 

হালাল উপার্জন ইবাদত কবুলের আবশ্যিক পূর্বশর্ত[1] আর হালাল  উপার্জনের  অন্যতম  প্রধান  মাধ্যম  হল বৈধ পন্থায় ব্যবসা-বাণিজ্য করাহালাল ব্যবসা-বাণিজ্য জীবিকা নির্বাহের সর্বোত্তম মাধ্যম হওয়ায় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ), খুলাফায়ে রাশেদীন, আশারায়ে মুবাশশারা সহ অধিকাংশ ছাহাবী ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতেনপক্ষান্তরে কারূণ, হামান, আবু জাহল, উতবা-শায়বা, উবাই ইবনে খালফ প্রমুখ কাফের মুশরিকরা ধোঁকা, প্রতারণামূলক সূদভিত্তিক হারাম ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতবস্ত্ততঃ হালাল-হারাম ব্যবসা-বাণিজ্যের রূপরেখা সম্পর্কে আমাদের সম্যক জ্ঞান থাকা অত্যন্ত যরূরীবক্ষ্যমাণ প্রবন্ধে এ বিষয়ে আলোচনা করার প্রয়াস পাব ইনশাআল্লাহ।-
হালাল ব্যবসার বিষয়ে ইসলামের দিক নির্দেশনা :
হালাল ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেনأَحَلَّ اللهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبَا আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল এবং সূদকে হারাম করেছেন (বাক্বারাহ ২/২৭৫)অন্যত্র এরশাদ হচ্ছেيَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُواْ لاَ تَأْكُلُواْ أَمْوَالَكُمْ بَيْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ إِلاَّ أَن تَكُوْنَ تِجَارَةً عَنْ تَرَاضٍ مِّنْكُمْ হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না, কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ(নিসা ৪/২৯)
উল্লিখিত আয়াতে لاَ تَأْكُلُواْ أَمْوَالَكُمْ بَيْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ (তোমরা পরস্পরের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করো না) অন্যায়ভাবে বলতে এখানে এমন সব পদ্ধতির কথা বুঝানো হয়েছে, যা সত্য ও ন্যায়নীতি বিরোধী এবং নৈতিক ও শরীআতের দৃষ্টিতে অবৈধলেনদেন অর্থ হচ্ছে পরস্পরের মধ্যে স্বার্থ ও মুনাফার বিনিময় করাযেমন ব্যবসা, শিল্প ও কারিগরী ইত্যাদি ক্ষেত্রে হয়ে থাকেসেখানে একজন অন্য জনের প্রয়োজন সরবরাহ করার জন্য পরিশ্রম করে এবং তার বিনিময় দান করেতাছাড়া আয়াতে أَنْ تَكُوْنَ تِجَارَةً عَنْ تَرَاضٍ مِّنكُمْ (পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে ব্যবসা-বাণিজ্য) বাক্যটি সংযুক্ত করে বলে দেয়া হয়েছে যে, যেসব ক্ষেত্রে ব্যবসার নামে সূদ, জুয়া, ধোঁকা-প্রতারণা ইত্যাদির আশ্রয় নিয়ে অন্যের সম্পদ হস্তগত করা হয়, সেসব পন্থায় সম্পদ অর্জন বৈধ ব্যবসার অন্তর্ভুক্ত নয়, বরং তা হারাম ও বাতিল পন্থাতেমনি যদি স্বাভাবিক ব্যবসার ক্ষেত্রেও লেনদেনের মধ্যে উভয় পক্ষের আন্তরিক সন্তুষ্টি না থাকে, তবে সেরূপ ক্রয়-বিক্রয়ও বাতিল এবং হারাম[2]
ব্যবসা-বাণিজ্যকে কলুষিত করার বিভিন্ন রূপ দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও সতর্কবাণী উচ্চারিত হয়েছে এবং ব্যবসা-বাণিজ্য সুনীতি ও ন্যায় বিচারের ভিত্তিতে পরিচালিত হবার প্রতি গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছেপক্ষান্তরে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কে অপর এক দৃষ্টিভঙ্গিতে একে নিষিদ্ধ না বললেও বিষয়টি স্পষ্ট জানা যায় যে, ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্যে এরূপ কিছু বিষয় আছে যা মুমিনদেরকে আল্লাহ তাআলার ইবাদত তথা ছালাত আদায় হতে বিরত রাখতে পারেএ বিষয়ে কুরআন মাজীদে বর্ণিত হয়েছেرِجَالٌ لاَّ تُلْهِيْهِمْ تِجَارَةٌ وَلاَ بَيْعٌ عَن ذِكْرِ اللهِ وَإِقَامِ الصَّلاَةِ وَإِيتَاء الزَّكَاةِ يَخَافُوْنَ يَوْماً تَتَقَلَّبُ فِيْهِ الْقُلُوْبُ وَالْأَبْصَارُ সেসব লোক, যাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর স্মরণ থেকে এবং ছালাত কায়েম ও যাকাত প্রদান থেকে বিরত রাখে না, তারা ভয় করে সেদিনকে যেদিন অনেক অন্তর ও দৃষ্টি বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে (নূর ২৪/৩৭)
মানুষের জীবন ধারণ এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্যের গুরুত্ব আদিকাল থেকেই স্বীকৃততবে জীবনের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে এরূপ ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে নিজেদের রক্ষা করা মুমিনদের কর্তব্যএজন্য জুমআর ছালাতের সময় ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ রাখতে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছেআল্লাহ বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا إِذَا نُوْدِيْ لِلصَّلاَةِ مِنْ يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِنْ كُنتُمْ تَعْلَمُوْنَ- فَإِذَا قُضِيَتِ الصَّلاَةُ فَانْتَشِرُوْا فِي الْأَرْضِ وَابْتَغُوْا مِنْ فَضْلِ اللهِ وَاذْكُرُوا اللهَ كَثِيْراً لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ-
হে ঈমানদারগণ! জুমআর দিনে যখন ছালাতের জন্য আহবান করা হয় তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর, এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা উপলব্ধি করআর ছালাত সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অন্বেষণ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও (জুমআ ৬২/৯-১০)উপরোক্ত আয়াতগুলোতে ব্যবসা-বাণিজ্য করার সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা রয়েছে
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেনأَطْيَبُ الْكَسُبِ عَمَلُ الرَّجُلِ بِيَدِهِ، وَكُلُّ بَيْعٍ مَبْرُوْرٍ  নিজ হাতে কাজ করা এবং হালাল পথে ব্যবসা করে যে উপার্জন করা হয় তাই সর্বোত্তম[3]
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) বলেন, কোন ব্যক্তি যখন ত্যাগ স্বীকার করে ছওয়াবের আশায় মুসলিম জনপদে কোন প্রয়োজনীয় দ্রব্য আমদানী করে এবং ন্যায্য মূল্যে তা বিক্রয় করে, আল্লাহর নিকট তিনি শহীদের মর্যাদা লাভ করেন[4]
কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তাআলা ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসঙ্গে তিজারাহ (ةجارة ), বায়উন (بيع ), শিরা (شراء) এ তিনটি শব্দ ব্যবহার করেছেনআল-কুরআনে ৮টি স্থানে তিজারাহ (ةجارة )[5] ৭টি স্থানে বায় (بيع )[6] এবং ১৪টি স্থানে শিরা (شراء )[7] শব্দ উল্লিখিত হয়েছে
হালাল ব্যবসা-বাণিজ্য : নিম্নোক্ত পাঁচটি পদ্ধতিতে ব্যবসা করলে তা হালাল হিসাবে ইসলামী শরীআত কর্তৃক অনুমোদিত হয়
(১) বায়উ মুরাবাহ : লাভ-লোকসানের ভিত্তিতে নগদ মূল্যে ক্রয়-বিক্রয়ের একক ব্যবসা
(২) বায়উ মুয়াজ্জাল : ভবিষ্যতে নির্ধারিত কোন সময়ে এক সাথে অথবা কিস্তিতে উভয় পক্ষের সম্মতিতে মূল্য পরিশোধের শর্তে ক্রয়-বিক্রয়
(৩) বায়উস সালাম : ভবিষ্যতে নির্ধারিত কোন সময়ে সরবরাহের শর্তে এবং তাৎক্ষণিক উপযুক্ত মূল্য পরিশোধ সাপেক্ষে নির্দিষ্ট পরিমাণ শরীআত অনুমোদিত পণ্য সামগ্রীর অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয়আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন,
قَدِمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمَدِيْنَةَ، وَالنَّاسُ يُسْلِفُوْنَ فِى الثَّمَرِ الْعَامَ وَالْعَامَيْنِ أَوْ قَالَ عَامَيْنِ أَوْ ثَلاَثَةً. شَكَّ إِسْمَاعِيْلُ فَقَالَ مَنْ سَلَّفَ فِىْ تَمْرٍ فَلْيُسْلِفْ فِىْ كَيْلٍ مَعْلُوْمٍ، وَوَزْنٍ مَعْلُوْمٍ
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন মদীনায় আসলেন তখন লোকেরা (ফল-ফসলের জন্য) অগ্রিমমূল্য প্রদান করততখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি অগ্রিম মূল্য প্রদান করবে সে যেন তা সুনির্দিষ্ট মাপের পাত্রের দ্বারা ও সুনির্দিষ্ট ওযনে প্রদান করে[8]
(৪) বায়উ মুযারাবা : এক পক্ষের মূলধন এবং অপরপক্ষের দৈহিক ও বুদ্ধিভিত্তিক শ্রমের সমন্বয়ে যৌথ ব্যবসা[9] এ পদ্ধতিতে লভ্যাংশ তাদের মাঝে চুক্তিহারে বণ্টিত হবে[10] রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) খাদীজা (রাঃ)-এর মূলধন দ্বারা এরূপ যৌথ ব্যবসা করেছিলেনছাহাবায়ে কেরাম অনেকেই এ পদ্ধতিতে ব্যবসা-বাণিজ্য করেছেন[11]
মুযারাবায় যে ব্যক্তি পুঁজির যোগান দেয় তাকে ছাহিবুল মাল صاحب المال বা রাববুল মাল (رب المال ) এবং শ্রমদানকারী তথা ব্যবসা পরিচালককে মুযারিব (مضارب ) বা উদ্যোক্তা বলা হয়এখানে ছাহিবুল মাল-এর পুঁজি হচ্ছে ব্যবসায় প্রদত্ত অর্থ-সম্পদ আর মুযারিবের পুঁজি হচ্ছে দৈহিক ও বুদ্ধিভিত্তিক শ্রম
মুযারাবা কারবারে লাভ হলে ব্যবসায় শুরুতে কৃত চুক্তির শর্তানুসারে ছাহিবুল মাল এবং মুযারিব উভয়েই উক্ত লাভ ভাগ করে নেয়পক্ষান্তরে ব্যবসায় লোকসান হলে সম্পূর্ণ লোকসান কেবল ছাহিবুল মাল তথা পুঁজি বিনিয়োগকারীকেই বহন করতে হয়আর এ ক্ষেত্রে মুযারিবের ব্যয়িত শ্রম, বুদ্ধি ও সময় বৃথা যায়মুযারিব কোন লাভ পায় না এটাই তার লোকসানতবে ব্যবসা পরিচালনায় মুযারিবের অবহেলা কিংবা চুক্তির শর্ত ভঙ্গের কারণে লোকসান হলে সেক্ষেত্রে লোকসানের দায়ভার মুযারিবকেই বহন করতে হবেকেননা এ ক্ষেত্রে পুঁজির মালিকের কোন ভূমিকা থাকে না[12]
(৫) বায়উ মুশারাকা : মূলধন ও লভ্যাংশের ব্যাপারে দুই বা ততোধিক অংশীদারের মধ্যকার চুক্তি অনুসারে ব্যবসা[13]
মুশারাকা পদ্ধতিতে ব্যবসায় লাভ হলে অংশীদারগণ পূর্ব নির্ধারিত অনুপাতে তা ভাগ করে নেয়আর লোকসান হলে অংশীদারগণ নিজ নিজ পুঁজির আনুপাতিক হারে তা বহন করে[14]
হালাল ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বরূপ :
ব্যবসা হালাল হওয়ার জন্য কতিপয় বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে এবং সেগুলো এড়িয়ে চলতে হবেঅন্যথা ব্যবসা বৈধ হবে নাএখানে সংক্ষেপে সেগুলি আলোচনা করা হ
সততা : সততা, আমানতদারী ও বিশ্বস্ততা ব্যবসা হালাল হওয়ার পূর্বশর্তরাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেনإن التجار يحشرون يوم القيامة فجارا إلا من اتقى وبر وصدق  ক্বিয়ামতের দিন ব্যবসায়ীরা মহা অপরাধী হিসাবে উত্থিত হবেতবে যারা আল্লাহকে ভয় করবে, সততা ও ন্যায় নিষ্ঠার সাথে ব্যবসা করবে তারা ব্যতীত[15]
মূল্য নির্ধারণ : মূল্য নির্ধারণ বলতে পণ্যের এমন একটি নির্দিষ্ট মূল্য নির্ধারণ বুঝায়, যাতে লভ্যাংশ থাকবে যেন পণ্যের মালিক ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, আবার উক্ত পণ্যের ভোক্তাদের জন্যও কষ্টসাধ্য না হয়
আনাস (রাঃ) বলেনغَلاَ السِّعْرُ عَلَى عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ سَعِّرْ لَنَا. فَقَالَ إِنَّ اللهَ هُوَ الْمُسَعِّرُ الْقَابِضُ الْبَاسِطُ الرَّزَّاقُ وَإِنِّىْ لأَرْجُو أَنْ أَلْقَى رَبِّىْ وَلَيْسَ أَحَدٌ مِنْكُمْ يَطْلُبُنِىْ بِمَظْلَمَةٍ فِىْ دَمٍ وَلاَ مَالٍ-রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যুগে (একবার পণ্যের) মূল্য বেড়ে গেলতখন ছাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমাদের জন্য মূল্য নির্ধারণ করে দিনতখন তিনি বললেন, নিঃসন্দেহে আল্লাহই হচ্ছেন মূল্য নির্ধারণকারী; তিনি সঙ্কোচনকারী, সম্প্রসারণকারী ও রিযিকদাতাআর আমি অবশ্যই এমন এক অবস্থায় আমার রবের সাথে সাক্ষাৎ করার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করি যাতে তোমাদের মধ্য থেকে কেউ আমার বিরুদ্ধে রক্ত (প্রাণ) ও সম্পদ সম্পর্কে যুলুমের অভিযোগ উত্থাপন করতে না পারে[16]
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি এসে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমাদের দ্রব্যের মূল্য নির্ধারণ করে দিনতখন তিনি বললেনبَلِ اللهُ يَخْفِضُ وَيَرْفَعُ وَإِنِّىْ لأَرْجُو أَنْ أَلْقَى اللهَ وَلَيْسَ لأَحَدٍ عِنْدِىْ مَظْلَمَةٌ  বরং আল্লাহই সঙ্কোচন-সম্প্রসারণ করেনআমি অবশ্যই এমতাবস্থায় আল্লাহর সাথে মিলিত হতে চাই যে, আমার পক্ষ থেকে কারো প্রতি সামান্যতম যুলুমও থাকবে না[17]
ইমাম শাফেঈ (রহঃ) তাঁর কিতাবুল উম্ম-এ ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন, তিনি একদা বাজারে হাতিব ইবনে আবী বালতাআর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন, তার কাছে ছিল কিসমিস ভর্তি দুটি বস্তাতখন ওমর (রাঃ) তার দাম জিজ্ঞেস করলেনউত্তরে হাতিব (রাঃ) বললেন, এক দিরহামওমর (রাঃ) বললেন, তায়েফ থেকে কিসমিস নিয়ে আসা একটি কাফেলার ব্যাপারে অবগত হলাম, তারা তোমাকে মূল্যে ঠকাচ্ছেঅর্থাৎ তারা এর চেয়ে বেশী দামে বিক্রি করছেঅতএব তুমি দাম বাড়িয়ে দাও অথবা বাড়ীতে গিয়ে যেভাবে ইচ্ছে বিক্রি করএ কথা শুনে হাতিব (রাঃ) বাড়ী চলে গেলেনঅতঃপর ওমর (রাঃ) বিষয়টি চিন্তা করে হাতিব (রাঃ)-এর বাড়ীতে আসলেন এবং তাকে বললেন, আমি তোমাকে যেটা বলেছিলাম সেটা শাসক হিসাবে, যা অবশ্য পালনীয় নয়; বরং এর মাধ্যমে আমি দেশবাসীর কল্যাণ চেয়েছিলামসুতরাং তুমি যেভাবে এবং যে দামে ইচ্ছা বিক্রি কর[18]
ইমাম শাওকানী (রহঃ) বলেন, দ্রব্যমূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হারামকারণ তা যুলুমের নামান্তরকেননা মানুষ তার সম্পদের উপর কর্তৃত্বের অধিকারী অথচ দ্রব্যমূল্য নির্ধারণ করে দেয়াটা এর প্রতিবন্ধক স্বরূপরাষ্ট্রপ্রধান জনগণের কল্যাণ হেতু দ্রব্যমূল্য কম রাখার ও উৎপাদন বৃদ্ধির যাবতীয় ব্যবস্থা করবে, এটাই তার বড় দায়িত্ব[19]
লাভের পরিমাণ : কোন পণ্যে কত লাভ করা যাবে এরূপ কোন নির্দেশনা কুরআন-হাদীছে পাওয়া যায় নাআবার সকল পণ্যে এক রকম লাভ করা যাবে না এরূপ কোন নিষেধাজ্ঞাও নেইআসলে শরীআতে বিষয়টিকে উন্মুক্ত রাখা হয়েছেকারণ লাভ নির্ণয়ের বিষয়টি নির্ভর করে স্থান-কাল-পাত্র ভেদে পরিস্থিতি-পরিবেশের উপরতবে লাভের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন সীমা সম্পর্কে একটা ধারণা আমরা হাদীছ থেকে লাভ করতে পারিউরওয়া ইবনে আবিল জাদ আল-বারেকী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
عَرَضَ لِلنَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم جَلَبٌ فَأَعْطَانِى دِيْنَاراً وَقَالَ أَىْ عُرْوَةُ ائْتِ الْجَلَبَ فَاشْتَرِ لَنَا شَاةً. فَأَتَيْتُ الْجَلَبَ فَسَاوَمْتُ صَاحِبَهُ فَاشْتَرَيْتُ مِنْهُ شَاتَيْنِ بِدِيْنَارٍ فَجِئْتُ أَسُوْقُهُمَا أَوْ قَالَ أَقُوْدُهُمَا فَلَقِيَنِىْ رَجُلٌ فَسَاوَمَنِىْ فَأَبِيْعُهُ شَاةً بِدِيْنَارٍ فَجِئْتُ بِالدِّيْنَارِ وَجِئْتُ بِالشَّاةِ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ هَذَا دِيْنَارُكُمْ وَهَذِهِ شَاتُكُمْ. قَالَ وَصَنَعْتَ كَيْفَ. قَالَ فَحَدَّثْتُهُ الْحَدِيْثَ فَقَالَ اللَّهُمَّ بَارِكْ لَهُ فِىْ صَفْقَةِ يَمِيْنِهِ.
নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকট পশুর একটি চালানের সংবাদ আসলতিনি আমাকে একটি দীনার দিয়ে বললেন, উরওয়া! তুমি চালানটির নিকট যাও এবং আমাদের জন্য একটি বকরী ক্রয় করে নিয়ে আসতখন আমি চালানটির কাছে গেলাম এবং চালানের মালিকের সাথে দরদাম করে এক দীনার দিয়ে দুইটি বকরী ক্রয় করলামবকরী দুটি নিয়ে আসার পথে এক লোকের সাথে দেখা হয়লোকটি আমার থেকে বকরী ক্রয় করার জন্য আমার সাথে দরদাম করলতখন আমি তার নিকট এক দীনারের বিনিময়ে একটি বকরী বিক্রয় করলাম এবং একটি বকরী ও একটি দীনার নিয়ে চলে এলামতখন আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! এই হচ্ছে আপনার দীনার এবং এই হচ্ছে আপনার বকরীতখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, এটা করলে কিভাবে? উরওয়া বলেন, আমি তখন তাঁকে ঘটনাটি বললামতখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, হে আল্লাহ! আপনি তার হাতের লেন-দেনে বরকত দিন[20]
উল্লেখ্য, উক্ত ছাহাবী রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর পক্ষে ১০০% লাভ করা সত্ত্বেও রাসূল (ছাঃ) তার জন্য বরকতের দোআ করেছেন এবং এ দোআর ফলে উক্ত ছাহাবী জীবনে প্রচুর বরকত লাভে ধন্য হয়েছেনবুখারীর বর্ণনায় এসেছে, উক্ত ছাহাবী মাটি ক্রয় করলেও তাতে লাভ হসুতরাং মজুতদারী না করে, প্রতারণার আশ্রয় না নিয়ে ক্রেতার স্বাভাবিক ও স্বেচ্ছা সম্মতির ভিত্তিতে কোন পণ্য বিক্রি করে বিক্রেতা ১০০% লাভ করলেও শরীআতে কোন বাধা নেইতবে এক্ষেত্রে ক্রেতা বা ভোক্তা যেন যুলুমের শিকার না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখা যরূরী
লাভের সর্বনিম্ন সীমা সম্পর্কে ইসলামী চিন্তাবিদগণ বলেছেন, সম্পদ ব্যবসায় বিনিয়োগ করলে কমপক্ষে এতটুকু লাভ করা যায় যাতে ব্যবসায়ীর পরিবারের ভরণ-পোষণ, ব্যবসার কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদান ও ২.৫% যাকাত দেয়ার পর মূলধন অক্ষত থাকেতবে ব্যবসা-বাণিজ্য ও পাওনা আদায়ের ক্ষেত্রে মানুষের সাথে দয়ার্দ্র, নম্র ও সদ্ব্যবহার পূর্বক ন্যায্য মূল্য গ্রহণ করা অত্যন্ত নেক কাজরাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেনرَحِمَ اللهُ رَجُلاً سَمْحًا إِذَا بَاعَ، وَإِذَا اشْتَرَى، وَإِذَا اقْتَضَى  আল্লাহ ঐ মহানুভব মানুষের প্রতি দয়া করেন, যে ক্রয়-বিক্রয়ে এবং নিজের পাওনা আদায়ে নম্রতা ও সহনশীলতা প্রদর্শন করে[21]
হারাম দ্রব্যের ব্যবসাও হারাম :
আল্লাহ তাআলা মদ, মৃত প্রাণী, রক্ত, প্রতিমা এবং শূকরের গোশত প্রভৃতি হারাম করেছেনতিনি বলেনحُرِّمَتْ عَلَيْكُمُ الْمَيْتَةُ وَالدَّمُ وَلَحْمُ الْخِنْزِيْرِ  তোমাদের প্রতি মৃতপ্রাণী, রক্ত, শূকরের গোশত হারাম করা হয়েছে (মায়েদাহ ৫/৩)
অন্যত্র তিনি বলেনيَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنْصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوْهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ হে ঈমানদারগণ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য নির্ধারক শরসমূহ শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ কিছুই নয়অতএব এগুলো থেকে বিরত থাক, যাতে তোমরা সফলকাম হও (মায়েদাহ ৫/৯০)
আল্লাহ তাআলা যেসব দ্রব্য হারাম করেছেন, সেসব দ্রব্যের ব্যবসাও হারাম করেছেনজাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে মক্কা বিজয়ের বছর এবং মক্কা থাকাবস্থায় বলতে শুনেছেন, তিনি বলেছেন,
إِنَّ اللهَ وَرَسُوْلَهُ حَرَّمَ بَيْعَ الْخَمْرِ وَالْمَيْتَةِ وَالْخِنْزِيْرِ وَالأَصْنَامِ. فَقِيْلَ يَا رَسُوْلَ اللهِ، أَرَأَيْتَ شُحُوْمَ الْمَيْتَةِ فَإِنَّهَا يُطْلَى بِهَا السُّفُنُ، وَيُدْهَنُ بِهَا الْجُلُوْدُ، وَيَسْتَصْبِحُ بِهَا النَّاسُ. فَقَالَ  لاَ، هُوَ حَرَامٌ. ثُمَّ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عِنْدَ ذَلِكَ قَاتَلَ اللهُ الْيَهُوْدَ، إِنَّ اللهَ لَمَّا حَرَّمَ شُحُوْمَهَا جَمَلُوْهُ ثُمَّ بَاعُوْهُ فَأَكَلُوْا ثَمَنَهُ.
নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাঁর রাসূল মদ, মৃত দেহ, শূকর ও প্রতিমা বেচা-কেনাকে হারাম করেছেনতখন বলা হ, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আপনি কি মনে করেন যে, লোকেরা মৃত পশুর চর্বি দ্বারা নৌকায় প্রলেপ দেয়, তা দিয়ে চামড়ায় বার্ণিশ করে এবং লোকেরা তা চকচকে করার কাজে ব্যবহার করে? তখন তিনি বললেন, না, তা হারামঅতঃপর তিনি বললেন, আল্লাহ তাআলা ইহুদীদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দেন, কারণ মহান আল্লাহ তাদের জন্য চর্বি হারাম করেছেন অথচ তারা একে গলিয়ে নেয় এবং তা বিক্রি করে ও তার মূল্য ভক্ষণ করে[22] অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেনلَعَنَ اللهُ الْخَمْرَ وَشَارِبَهَا وَسَاقِيَهَا وَبَائِعَهَا وَمُبْتَاعَهَا وَعَاصِرَهَا وَمُعْتَصِرَهَا وَحَامِلَهَا وَالْمَحْمُوْلَةَ إِلَيْهِ আল্লাহ লানত বর্ষণ করেন মদের উপর এবং যে তা পান করে, যে তা পরিবেশন করে, যে তা বিক্রি করে, যে তা ক্রয় করে, যে তার নির্যাস তৈরী করে, যার জন্য নির্যাস তৈরী করা হয়, যে তা বহন করে আর যার কাছে বহন করে নিয়ে যাওয়া হয় সবার উপর[23]
বায়উল ঈনা তথা পাতানো ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ :
ইসলামী শরীআত বায়উল ঈনা তথা পাতানো ক্রয়-বিক্রয়কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেবায়উল ঈনার প্রকৃতি সম্পর্কে শায়খুল ইসলাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেছেন,
والعينة ان يبيع ثيئا إلى غيره بثمن معين (مائة وعشريث ريمنار مثلا) إلى اجل (سنة مثلا) ويسلمه إلى المشترى ثم يشتريه قبل قبض الثمن بثمن اقلى من ذلك القدر (بمائة مثلا) يدفعه نقدًا-



* প্রধান মুহাদ্দিছ, বেলটিয়া কামিল মাদরাসা, জামালপুর
[1]. মুসলিম, মিশকাত হা/২৭৬০
[2]. মুফতী মুহাম্মদ শফী, তাফসীর মাআরেফুল কুরআন, অনুবাদ ও সম্পাদনা: মাওলানা মুহিউদ্দীন খান, ২৪৪ পৃঃ
[3]. আহমাদ, মিশকাত হা/২৭৮৩, সিলসিলা ছহীহাহ হা/৬০৭
[4]. কুরতুবী, আল-জামি লিআহকামিল কুরআন (কায়রো: দারুশ শাব, ১৯৭২) ১৯/৫৬ পৃঃ
[5]. বাক্বারাহ ২/১৬, ২৮২; নিসা ৪/২৯; তওবা ৯/২৪; নূর ২৪/৩৭; ফাতির ৩৫/২৯; ছফ ৬১/১০; জুমআহ ৬২/১১
[6]. বাক্বারাহ ২৫৪, ২৭৫; তওবা ৯/১১১; ইবরাহীম ১৪/৩১; হজ্জ ২২/৪০; নূর ২৪/৩৭; জুমআ ৬২/৯
[7]. বাক্বারাহ ৪১, ৮৬, ৯০, ১০২, ১৭৫, ২০৭; আলে ইমরান ১৭৭ ও ১৮৭; নিসা ৭৪; মায়েদাহ ৪৪; তাওবা ৯, ১১১; ইউসুফ ২০, ২১
[8]. বুখারী হা/২২৩৯; মুসলিম হা/১৬০৪
[9]. আব্দুর রহমান আল-জাযায়রী, কিতাবুল ফিকহ আলাল মাযাহিবিল আরবাআহ (বৈরুত : দারুল ইলামিয়্যাহ, তা.বি), ৩/৩৪; শাহ ওয়ালী উল্লাহ, হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা (বৈরুত : দারুল কুতুব আল-ইলমিয়্যাহ, তা.বি.) ২/১১৬
[10]. মুওয়াত্ত্বা হা/২৫৩৫, দারাকুৎনী হা/৩০৭৭, ইরওয়াউল গালীল হা/১৪৭২, ৫/২৯২ পৃঃ; বুলূগুল মারাম হা/৮৯৫
[11]. ইমাম শামসুদ্দীন আস-সারাখসী, আল-মাবসূত (বৈরুত : দারুল মারিফাহ, ১৪১৪ হিঃ/১৯৯৩ ইং), ২২/১৮ পৃঃ
[12]. আলী আল-খাফীফ, আশ-শিরকাতু ফী ফিকহিল ইসলামী (কায়রো : দারুন নশর, ১৯৬২ ইং), ৭৪ পৃঃ
[13]. সাদী আবু হাবীব, আল-কামূসুল ফিকহ (পকিস্তান : ইদারাতুল কুরআন ওয়াল উলূমিল ইসলামিয়্যাহ, তাবি), ১৯৫ পৃঃ; মুফতী মুহাম্মাদ তাক্বী উছমানী, অনুঃ মুফতী মুহাম্মাদ জাবের হোসাইন, ইসলামী ব্যাংকিং ও অর্থায়ন পদ্ধতি : সমস্যা ও সমাধান, (ঢাকা : মাকতাবাতুল আশরাফ, ২০০৫ ইং), ২৭ পৃঃ
[14]. আবুদাঊদ হা/৪৮৩৬, সনদ ছহীহ, বুলূগুল মারাম হা/৮৭০, নায়লুল আওত্বার হা/২৩৩৪-৩৫
[15]. তিরমিযী হা/১২১০, ইবনু মাজাহ হা/২১৪৬, ছহীহাহ হা/১৪৫৮, মিশকাত হা/২৬৭৭
[16]. তিরমিযী, মুসনাদে আহমাদ হা/১২৬১৯
[17]. আবূদাঊদ হা/৩৪৫০; ছহীহুল জামে হা/২৮৩৬
[18]. ইমাম শাফেঈ (রহঃ), আল-উম্ম (কায়রো: দারুশ সাউব, ১৯৬৯), ২/২০৯ পৃঃ; মুছান্নাফ আব্দুর রায্যাক হা/১৪৯০৬, ৮/২০৭
[19]. ইমাম শাওকানী (রহঃ), নায়লুল আওত্বার (কায়রো : মাকতাবাতুল হালাবী, ১৩৯১ হিঃ) ৫/৩৩৫
[20]. বুখারী হা/৩৬৪২; আবূদাঊদ হা/৩৩৮৪; তিরমিযী হা/১২৫৮
[21]. বুখারী হা/২০৭৬ ক্রয়-বিক্রয় অধ্যায়; ইবনু মাজাহ হা/২২০৩; মিশকাত হা/২৭৯০
[22]. বুখারী হা/২২৩৬; মুসলিম হা/১৫৮১; মিশকাত হা/২৭৬৬
[23]. আবু দাঊদ হা/৩৬৭৪; মিশকাত হা/২৭৭৭; ছহীহুল জামে হা/৫০৯১


 কামারুযযামান বিন আব্দুল বারী , সিরাজগঞ্জ।

No comments: